লেখক পরিচিতিঃ অমর মিত্রের জন্ম ১৯৫১ সালে বসিরহাটে। রাজ্য সরকারি চাকরি করেও আজীবন সাহিত্যসাধনায় ব্রতী। ১৯৭৪ সালে 'মেলার দিকে ঘর' গল্প দিয়ে সাহিত্যিক হিসেবে আত্মপ্রকাশ।২০১৭ সালে সমস্ত জীবনের সাহিত্য রচনার জন্য পান যুগশঙ্খ পুরস্কার। খ্যাতনামা অভিনেতা ও নাট্যকার মনোজ মিত্র তার অগ্রজ।
বঙ্গোপসাগরের মোহনায় ছ’মাসের জন্য জেগে ওঠে এক চর। যার সঙ্গে মিশে যায় লিসবনের কাছিমের জনশ্রুতি, পর্তুগীজ হার্মাদ পেদ্রোর কিংবদন্তী। এই চর নগর সভ্যতার দূষণ ও শোষণ থেকে মুক্ত সজীব এক ভূ-খণ্ড।
সেখানে মৎস্যজীবীরা তাদের ষান্মাসিক ঘর বাঁধে। কিন্তু প্রশাসন, ‘গরমেন’, সভ্যতার লোভাতুর দৃষ্টি সেই চরটিকে দখল করতে তৎপর হয়। বাতাসিদের মত জেলেনিরা ভোগ্যপণ্য, ‘মৎস্যগন্ধা’য় পর্যবসিত হয় ‘সভ্য’ মানুষের নখর থাবায়। শেষ পর্যন্ত চরটিই উধাও হয় যার হদিশ পায় না নাগরিক মানুষ। বর্তমান এককেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থার অকারণ খবরদারি ও বিশ্ব-আধিপত্যবাদের হৃদয়হীন রাজনৈতিক-অর্থনীতির প্রবল প্রতিবাদ যেন উচ্চারিত হয়েছে এইভাবে।
ম্যাজিক রিয়ালিজমের মোড়কে এই উপন্যাস বস্তুত সেই চরের কথা বলে যা আধুনিক মানুষের অধরা মাধুরী। লেখক অনায়াসে বাস্তব ও কল্পনাকে মেলান, তথ্য ও ইন্দ্রজালকে এক চালচিত্রের বুনোটে সাজান।
বিষয়ের মহাকাব্যিক বিস্তারের সঙ্গে সঠিক সঙ্গত করে গেছে উপন্যাসটির বিশেষ ভাষারীতি, প্রত্যেক অধ্যায়ের শুরুতে চুম্বকীয় পয়ারে লেখা মূলকথার অবতারণা। আদ্যন্ত একটি মৌলিক শৈলী! স্থানিক বর্ণনায় যেভাবে পারিপার্শ্ব আর প্রকৃতি হয়ে উঠেছে মানবমনের নানা অভিব্যক্তির প্রতিরূপ। "একসঙ্গে নগ্ন রমণীরা জাগাতে থাকে সাগরের নীচে ঘুমনো ধনপতি কাছিমকে… গভীর রাতে বোধহয় জাগে ধনপতি। তারা টের পায় চর ভেসেছে বড় জাহাজের মতো...সাগরে ঢেউ উঠছে। চর দুলছে। সাগর উথাল পাথাল হচ্ছে। পেদরুর জাহাজ ভোঁ দিচ্ছে।" এই উপাখ্যানে অবিসংবাদিত ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে নারীসত্তার প্রাধান্য। লোকসঙ্গীতের মূর্ছনায় উপন্যাসটি যেন জলাভূমির কাব্য হয়ে ওঠে।
Weight:643 gm
VARIANT | SELLER | PRICE | QUANTITY |
---|
লেখক পরিচিতিঃ অমর মিত্রের জন্ম ১৯৫১ সালে বসিরহাটে। রাজ্য সরকারি চাকরি করেও আজীবন সাহিত্যসাধনায় ব্রতী। ১৯৭৪ সালে 'মেলার দিকে ঘর' গল্প দিয়ে সাহিত্যিক হিসেবে আত্মপ্রকাশ।২০১৭ সালে সমস্ত জীবনের সাহিত্য রচনার জন্য পান যুগশঙ্খ পুরস্কার। খ্যাতনামা অভিনেতা ও নাট্যকার মনোজ মিত্র তার অগ্রজ।
বঙ্গোপসাগরের মোহনায় ছ’মাসের জন্য জেগে ওঠে এক চর। যার সঙ্গে মিশে যায় লিসবনের কাছিমের জনশ্রুতি, পর্তুগীজ হার্মাদ পেদ্রোর কিংবদন্তী। এই চর নগর সভ্যতার দূষণ ও শোষণ থেকে মুক্ত সজীব এক ভূ-খণ্ড।
সেখানে মৎস্যজীবীরা তাদের ষান্মাসিক ঘর বাঁধে। কিন্তু প্রশাসন, ‘গরমেন’, সভ্যতার লোভাতুর দৃষ্টি সেই চরটিকে দখল করতে তৎপর হয়। বাতাসিদের মত জেলেনিরা ভোগ্যপণ্য, ‘মৎস্যগন্ধা’য় পর্যবসিত হয় ‘সভ্য’ মানুষের নখর থাবায়। শেষ পর্যন্ত চরটিই উধাও হয় যার হদিশ পায় না নাগরিক মানুষ। বর্তমান এককেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থার অকারণ খবরদারি ও বিশ্ব-আধিপত্যবাদের হৃদয়হীন রাজনৈতিক-অর্থনীতির প্রবল প্রতিবাদ যেন উচ্চারিত হয়েছে এইভাবে।
ম্যাজিক রিয়ালিজমের মোড়কে এই উপন্যাস বস্তুত সেই চরের কথা বলে যা আধুনিক মানুষের অধরা মাধুরী। লেখক অনায়াসে বাস্তব ও কল্পনাকে মেলান, তথ্য ও ইন্দ্রজালকে এক চালচিত্রের বুনোটে সাজান।
বিষয়ের মহাকাব্যিক বিস্তারের সঙ্গে সঠিক সঙ্গত করে গেছে উপন্যাসটির বিশেষ ভাষারীতি, প্রত্যেক অধ্যায়ের শুরুতে চুম্বকীয় পয়ারে লেখা মূলকথার অবতারণা। আদ্যন্ত একটি মৌলিক শৈলী! স্থানিক বর্ণনায় যেভাবে পারিপার্শ্ব আর প্রকৃতি হয়ে উঠেছে মানবমনের নানা অভিব্যক্তির প্রতিরূপ। "একসঙ্গে নগ্ন রমণীরা জাগাতে থাকে সাগরের নীচে ঘুমনো ধনপতি কাছিমকে… গভীর রাতে বোধহয় জাগে ধনপতি। তারা টের পায় চর ভেসেছে বড় জাহাজের মতো...সাগরে ঢেউ উঠছে। চর দুলছে। সাগর উথাল পাথাল হচ্ছে। পেদরুর জাহাজ ভোঁ দিচ্ছে।" এই উপাখ্যানে অবিসংবাদিত ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে নারীসত্তার প্রাধান্য। লোকসঙ্গীতের মূর্ছনায় উপন্যাসটি যেন জলাভূমির কাব্য হয়ে ওঠে।